Tuesday 1 March, 2011

অমিতের লেখা ১লা মার্চ ২০১১



আরে না না,আমি জানার কৌতুহলবশতঃ: এমনি জানতে চাইলাম। আমার লেখা আবার ছাপবার জায়গায় গেল কোথায়? হয়তো একদিন যাবে,সেদিন তোকেই বলবো।আর না হলে আমরাই আমাদের মনেরপাতায় অনুভূতির যে আঁকিবুকি কেটে গেলাম(এই Blog-র দৌলতে)সেই রঙেই রঙীন থেকে যাবো।সময় হলে একজন একজন করে আকাশে উড়ে যাবো,ছেলে মেয়েদের হাত ফস্কানো গ্যাসবেলুনের মতো।কষ্ট একটু হবে!সুতো ছিঁড়লে কার না কষ্ট হয়।

ওখানে মেঘের দেশে ঠিক আবার দেখা হবে,তাই না বল? সেই দেশে যেখানে শুধু গাছে গাছে রূপোর ডালে সোনার পাতা, মণিমুক্তোর ফুল আর হীরের ফলই দোলে না,যেখানে খোলা প্রাণের গলা জড়িয়ে অতীত থাকে শুয়ে।লাইব্রেরী থেকে বই টেনে বের করার মতো এক-একটা পুরানো দিন টেনে বের করা যায়।যেখানে মাঠে খেলতে নামার আগে পুরনো জার্সি পরিয়ে দেওয়ার মতো পুরনো দস্যিপনা আবার অঙ্গে লেপ্টে দেয়,উন্মুক্তো বাতাস….যেখানে ব্যস্ত সময়ও আলসেমিতে থমকে দাড়ায় মেঘের জলে নাইবে বলে।

ওখানেই ঋত্বিক সত্যজিৎ-এর ছবি চলে,চাঁদ সূর্যের আলোয় সেট তৈরী হয়।ছবি বিশ্বাস আসে,কমল মিত্র আসে।খোলামাঠে মাইকে লোক ডেকে ডেকে সেসব ছবি দেখানো হয়।দেখার চাইতে, দেখতে যাওয়ার উত্তেজনা বড্ড বেশী।উত্তমকুমার অভিনয়ের টানে কুয়াশাকে কাঁদায়…ঝমঝম করে বৃস্টি নামে।ওখানেই কাশ্মীর,ওখানেই শিলং,ওখানেই ডাললেক,ওখানেই গড়েরমাঠ,ওখানেই শঙ্খচিলের সাথে Wind-surfing।ওখানেই বাবলুদের বাড়ির তিনতলা থেকে ওড়ানো লাটখাওয়া ঘুড়ির সাথে Para-gliding।ফুচকাওয়ালা টিং টিং ঘণ্টায় সন্ধ্যা নামে।তারপর ট্রামে চড়ে তারা আসে ঝিকমিক চশমা চোখে পড়ে।পূজোয় নুতন জুতো কিনে বাটার দোকান থেকে বিনিপয়সায় পাওয়া।

ওখানেই স্বাতী,ওখানেই নন্দিনী,ওখানেই মধূমিতা,ঈশিতা,নীতা…আবার তৃষ্ণা অথবা জয়িতা…সকলেই এখন অভ্র-দ্বিতা (মেঘের মেয়ে)।ওদের কারোর স্বপ্নপূরণ হয়েছে,কারো কারোর হয়নি।ওদের পুঁজি(asset)বলতে হাসিখুশি মলাটের ছবি,আদর্শলিপি-র বিদ্যাসাগরের হাসি অথবা বৃত্তিপরীক্ষা-র পুরনো প্রশ্নমালার ভিতর ঠাকুরমার গায়ের গন্ধ।শাড়ীগহনা কি আর শরীর ভেদ করে মনে ঢুকতে পারে?আবার সংসারের গ্লানিও কি এইদেশের বৃষ্টিতে লেগে থাকতে পারে?সব ধুয়ে মুছে যায়।এখানে আমার স্ত্রী নির্দ্বিধায় আমার হাত ছেড়ে ওদের সাথে গিয়ে বসে…কোনো উষ্মা নেই,বিভেদ নেই। আবার নিশ্চিন্তে যেকোনো লোকের হাত ধরে যেকোনো রাস্তায় কানামাছি খেলতে চলে যায়। কোনো গণিতের হিসেব নেই,ভালমন্দ বিচার অবিচার নেই…এখানে সকলেই বন্ধু।শম্ভুদার সিড়িরঘরে হাঁসের ডিম ফুটে,পাখির জায়গায় কোমল সূর্য বেড়িয়ে আসে। Tele-tubbiesএর সূর্য খিলখিলিয়ে হাসে আমার মনে-সব অমূলক দুশ্চিন্তা…আলোর ঝর্ণায় কাঁচ হয়ে খান খান হয়ে যায়।

সেই দেশ বন্ধু…মেঘের দেশ…মনের দেশ…লিপ্সায় উন্মত্ত ডাকাতের দল,আরো কি করবে আমার mai-er(বুঝতে পারিনি)বুক থেকে করুক।কই আমার মন থেকে কবিতা মোছাতে পারবে কি?

আজও আছে গোপন…ফেরারী মন

বেজে গেছে কখন সেই টেলিফোন।

ভাল থাকিস, ইচ্ছে হলে সবাইকে পড়াস,মনের দেশে সবার berth রিজার্ভ করে রেখেছি।

আমার সংযোজন: লেখা Publishকরতে হলে,কি করতে হয়? অমিত আমাকে শুধিয়ে ছিল। Reply দিয়েছিলেম। সঙ্গে জুড়ে ছিলেম। তোর লেখা ছাপাতে চাইছিস কি? তার উত্তরে অমিতের এই লেখা।মনে মনে চাইছিলাম আমার এই সম্পদ কারোর সাথে shareকরবো না। শীতের রোদে পিঠ দিয়ে একলা বসে রসিয়ে রসিয়ে চেটেপুটে খাব।তবে ঠেকের অলিখিতবিধি আর অমিতের শেষ দুটো লাইন অমান্য করতে পারলাম না।

3 comments:

  1. উফফ...কি লেখা রে,আর সেই সঙ্গে ঝরঝরে অনুবাদ...সপনে দেখা কবিতা...তোরা মনটা ভরিয়ে দিস,ধন্যবাদ....কাল মানস,শানতনু আর আমি মানসের ক্লাবে বসেছিলাম

    ReplyDelete
  2. Dush! eta amar anubad noy re.. ki je bolis, Amit-er lekha ami anubad korbo? Amit english haraph-e likhechhe r ami se bangla haraph korechhi matro.

    ReplyDelete
  3. বো*চো*টা এক‌একটা এইরকম লেখা লিখবে আর আত্মগ্লানিতে আমাকে ভরিয়ে দেবে: কেন এইরকম লেখা হাজার চেষ্টা করেও লিখতে পারি না? ভাষা জানা এক জিনিয, আর নিজের কথা এইভাবে তুলে ধরাটা (express) সম্পুর্ণ আলাদা জিনিয! লক্ষ্য করে দেখ: চিন্তাগুলো যেন মনের মাঠে এধার‌‌‌-ওধার, ইতিউতি ছুটে বেড়াচ্ছে, আর কোলা বসে বসে এই অবিরাম ছুটোছুটির ভেতর লুকিয়ে থাকা গল্পটাকে তুলে ধরছে, পাকা commentator-এর মত।

    ReplyDelete

Note: only a member of this blog may post a comment.